টুপিতে নকশা
গোলাম মওলা সিরাজ, নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম)
দুধকুমার নদের ভাঙনে গ্রামের বেশিরভাগ পরিবার জমি-ভিটে হারিয়েছে। সেই গ্রামজুড়ে এখন শুধু চর। গ্রামের প্রত্যেক পরিবারের কর্মক্ষম পুরুষরা বছরের বেশিরভাগ সময় কাজ করে বাইরের জেলাগুলোতে। আর গ্রামের ৮০ ভাগ নারী টুপিতে নকশা করে আয় করে থাকে। সুই-সুতোয় ভাগ্য ফেরাতে ব্যস্ত গৃহিণী থেকে শুরু করে স্কুল-কলেজ পড়ূয়া মেয়েরাও। এটি কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার বেরুবাড়ী ইউনিয়নের পূর্ব চেয়ারম্যানপাড়া গ্রামের কথা। গ্রামের মিনারা বেগম বলেন, ' পুরুষগোর একা কামের ট্যাহায় সংসার চলতো না। হামরা তো কিছুই করতাম না। এহন টুপির কাম কইরা হামরাও হেগোরে ট্যাহা দিব্যার পারতাছি।' ২০১১ সালের শেষের দিকে এলাকার ১৫ নারীকে টুপিতে নকশা করার প্রশিক্ষণ দেয় আরডিআরএসের 'সমন্বিত মঙ্গা নিরসন (প্রাইম) প্রকল্প'। প্রশিক্ষণের সময় প্রত্যেক প্রশিক্ষণার্থী নারীকে মজুরি এবং যাতায়াত বাবদ ৮০ টাকা এবং প্রতিদিন দুপুরের খাবারের জন্য ৫০ টাকা দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণ শেষে তাদের সরঞ্জামাদি দেওয়ার পাশাপাশি টুপি আমদানিকারকদের সঙ্গে সংযোগ করে দেয় এ প্রকল্প। বর্তমানে গ্রামের ৮০ ভাগ নারী এ কাজে সম্পৃক্ত। এখানকার নকশা করা টুপি যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়, দেশের বাইরেও। বেরুবাড়ী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মমিনুর রহমান বলেন, সরকারিভাবে সুদমুক্ত ঋণ সুবিধাসহ প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ দেওয়া গেলে ওই গ্রামের নারীরা আরও উন্নতমানের ও বিদেশে রফতানিযোগ্য টুপি তৈরি করতে পারত।
Source: http://www.samakal.net
No comments:
Post a Comment