Thursday, April 30, 2015

কাপড়ের টুপি তৈরী: প্রস্তুতপ্রণালী ও বাজারজাতকরণ l



Related All Links:

নামাজের টুপি তৈরি ব্যবসা


কাপড়ের টুপি তৈরী: প্রস্তুতপ্রণালী, বাজারজাতকরণ, প্রশিক্ষন প্রদানকারী সংস্থা ও কেস স্টাডি



দেশে তৈরি টুপি রপ্তানি হচ্ছে(26 July 2014)




Related All Links: 

Cap Export is a promising field for the economy of Bangladesh

ধর্ম, রাজনীতি, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যে এক ঐশ্বর্য্যের নিদর্শন 'টুপি'

ধর্ম, রাজনীতি, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যে এক ঐশ্বর্য্যের নিদর্শন 'টুপি'
নজিবউল্লাহ সাজওয়াল


ক্যাপ বা হ্যাট যা বাংলায় টুপি, আর টুপি হলো মাথা আচ্ছাদন করার জিনিস। আনুষ্ঠানিক বা ধর্মীয় কারণে, ফ্যাশন আনুষঙ্গিক হিসেবে, সামরিক, জাতীয়তা বোঝাবার জন্য সাধারণত টুপির ব্যাবহার হয়ে থাকে। নিরাপত্তার জন্য আমরা যে হেলমেট ব্যবহার করে থকি সেটাও এক ধরনের টুপি। টুপি নিয়ে এই কথাগুলো আমরা সবাই জানি। প্রয়োজন কিংবা ফ্যাশন যাই বলিনা কেন টুপির কদর সব সময়েই সমান গোটা দুনিয়া জুড়ে। স্টাইল আইকন থেকে শুরু করে গ্রামের সাধারণ কৃষকের মাথায়ও ঠাঁই করে নিয়েছে এ বস্তুটি। এক দিকে রোদ বৃষ্টি থেকে সুরক্ষা পেতে, অন্যদিকে চেহারায় বিভিন্ন মাত্রা সংযোজন করতেই মুলত: আধুনিক নারী পুরুষ মাথায় জড়াচ্ছেন টুপি বা ক্যাপ। ইতিহাস ঘাটা ঘাটি করলে দেখা যায় যে আদিম কাল থেকেই মানুষ গাছের পাতা দিয়ে টুপি বানিয়ে রোদ, বৃষ্টি থেকে নিজেদের মাথা রক্ষা করবার চেষ্টা করত। কেউ কেউ পশু পাখির চামড়া, পালক দিয়ে টুপি বানিয়ে গোত্রের ভিতরে তার অবস্থান প্রকাশ করত।   আজ থেকে ৬০০ বছর আগের প্রাচীন গ্রীসে ভ্রমণকারীরা সম্পূর্ণ দড়ি দিয়ে নির্মিত ক্যাপ ব্যবহার করতেন। তবে তখন ক্যাপের পেছনে কেবল মুন্ডু রৰার বিষয়টি গুরত্ব পেত। ভুলক্রমেও স্টাইলের হাতছানি ছিলনা টুপি ব্যবহারের নেপথ্যে। কালের পরিক্রমায় টুপি কেবল ফ্যাশনের অনুষঙ্গ হিসেবেই বিবেচিত হয়নি বরং নানাভাবে বিভক্ত হয়ে বর্ধিত করেছে এর ব্যবহারকে। ফর্মাল, স্পোর্ট, ক্যাজুয়েল ক্যাপের বাইরেও আর দশজনের চেয়ে নিজেকে আলাদাভাবে উপস্থাপন করতে আমাদের যুগে যুগে শরনাপন্ন হতে হয়েছে টুপিরই। সাহিত্যিক রাজনীতিবিদ কিংবা ফিল্ম স্টার সবাই নিজেদের স্টাইল নির্ধারণের জন্য বার বার হাত বাড়িয়েছেন টুপির দিকেই। এই টুপি'র বিভিন্ন ধরণের নাম ও প্রকারভেদ রয়েছে। সেই প্রকারভেদের মধ্যে অল্প কিছু নাম ও ছবি নিয়ে এই পোস্ট। গান্ধী টুপি- “গান্ধী টুপির” ইতিহাস ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে জড়িত. তখন এই রকমের টুপি পরিহিত অবস্থায় ভারতীয়রা – ব্রিটিশ জেলে রাজ বন্দী হিসাবে থাকতেন। 


মাথায় এই সাদা টুপি পরে থাকার মানে হত যে, এই মানুষটি ব্রিটিশ শাসকদের স্বৈরাচার থেকে নিগৃহিত হয়েছেন। এই ঐতিহ্যের শুরু হয়েছে মহাত্মা গান্ধী থেকে. আরও বেশী করে এই টুপি জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু তা পরে থাকার পর থেকেই। তিনি এই টুপি ইংরেজ জেল থেকে বের হওয়ার পরেও বহু বছর ত্যাগ করেন নি। সাম্প্রতিককালে আন্না হাজারে ও কেজরিওয়ালের ব্যবহারের ফলে এ টুপি হয়ে উঠেছে 'দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংগ্রামের প্রতীক'। জিন্নাহ টুপি- দ্বিজাতিতত্ত্বের জনক কায়েদে আজম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ টুপি ও সু পরতেন। 

পূর্বপাকিস্তানের অনেক নেতাও পরতেন। বঙ্গবন্ধু চীন সফরের সময় শেরওয়ানি ও জিন্নাহ টুপি পরেছিলেন। এসব ছিল সেই জামানার একটা কালচার বা সংস্কৃতি। ভাসানী টুপি- মজলুম জননেতা ছিলেন মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী। তিনি লুঙ্গি পরতেন এবং মাথায় তাল পাতার টুপি দিতেন। 


মওলানা সাহেব সত্যিই গণমানুষের নেতা ছিলেন। মওলানা সাহেবই এদেশে সর্বপ্রথম ইসলামি সমাজতন্ত্রের ডাক দিয়েছিলেন। মওলানা সাহেবকে পশ্চিমা মিডিয়া বলত ‘প্রফেট অব ভায়োলেন্স’ আর ‘মাও অব ইস্ট ইন ডিজগাইজ অব অ্যা প্রিস্ট’। কেউ কেউ ‘রেড’ মওলানাও বলতেন। সাধারণ মাওলানারা ভাসানী সাহেবকে পছন্দ করতেন না। অনেকেই প্রকাশ্যে তার বিরুদ্ধে ছিলেন। মওলানা ভাসানীর রাজনীতির মূল উৎস ছিল আল্লাহর কিতাব আল কোরআন। পীরদের টুপি- শুধুমাত্র ভারতীয় উপমহাদেশে নয় মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশেও পীরদের স্বতন্ত্র টুপি ব্যবহারের প্রচলন রয়েছে। 


হাজি টুপি- মুসলিমদের পঞ্চস্তম্ভ পালনের অন্যতম হচ্ছে হজ্জ্ব। আর সেখানে সাদামাটা নামাজী টুপির বাইরে স্বতন্ত্রভাবে হাজি টুপির ব্যবহার রয়েছে। শিখ পাগড়ি- ভারতীয় উপমহাদেশে উদ্ভূত শিখ ধর্মালম্বীদের স্বতন্ত্র গোলাকৃতি কাপড় মোড়ানো কুণ্ডলী শিখ পাগড়ি নামে পরিচিত। 
'কাশ্মীরী টুপি' তথা 'মান্না দে টুপি'- ত্রি দেশ তথা ভারত-পাকিস্তান-চীন শাসিত ভূ-স্বর্গখ্যাত কাশ্মীরের ঐতিহ্যবাহী টুপিটি কাশ্মীরি টুপি সারা বিশ্বে পরিচিত। 

সাম্প্রতিককালে এটা সঙ্গীতপ্রেমীদের মাঝে 'মান্না দে টুপি' নামে পরিচিত। নেপালি টুপি- নেপালি রাজা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষদের মাঝেও শত বছরের ধর্মীয়-সাস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে নেপালি টুপি ব্যবহার করে থাকে। 

শাহী টুপি- মোঘল সাম্রাজ্য থেকে শুরু করে আজ অবধি রাজা-বাদশাহ ও তাদের বংশধররা ঐতিহ্যবাহী শাহী টুপি ব্যবহার করে থাকেন। 
এছাড়াও রয়েছে- নামাজ-রোজার মতো ধর্মীয় কাজে ব্যবহারের জন্য টুপি এবং স্টাইল, খেলাধুলা, রোদে ব্যবহারের জন্য টুপি। প্রতি ক্ষেত্রেই টুপির রয়েছে রকমফের। এত টুপির মধ্যেও ক্রুশ কাঁটা বা কুর্শি কাঁটায় বোনা টুপির কদরও বেশি। রমজান মাসে পাঁচ ওয়াক্তের নামাজে মসজিদে মুসলিস্নদের সংখ্যা বেড়ে যায়। কুর্শি কাঁটার টুপি প্রায় সকল মুসলিস্নর পকেটেই দেখা যায়। বগুড়ার ধুনট ও শেরপুরের গ্রামে কয়েক বছর ধরে নীরবে-নিভৃতে এই টুপি তৈরি হয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তো যাচ্ছেই, বিদেশেও পাড়ি দিয়েছে এই টুপি। প্রায় ৬ ইঞ্চি লম্বা স্টিলের একটি চিকন কাঠির মুখে সুতা পেঁচিয়ে ধরার জন্য সামান্য বাঁকানো, এরই নাম ক্রুশ কাঁটা। বাম হাতের আঙ্গুলের সঙ্গে সেলাই মেশিনের ববিনের মতো সুতা এঁটে নিয়ে হাতের কায়দায় ক্রুশ কাঁটার চিকন বাঁকানো মুখের শৈলীতে তৈরি হয় টুপিসহ হস্ত শিল্পের নানা সামগ্রী। ক্যাপ-টুপির বিভিন্ন ব্র্যান্ড অ্যাডিডাস সিকে রিবক, নাইক, পিউমা প্রভৃতি হচ্ছে ক্যাপের নামী দামী সব ব্র্যান্ড। আন্তর্জাতিক ক্যাপ বাজারে দাপটের সঙ্গে রাজত্ব করে বেড়াচ্ছে এ ব্র্যান্ডগুলো। তবে বিদেশি ব্র্যান্ডের পাশাপাশি আমাদের দেশীয় টুপির বাজারও কিন্তু মন্দ নয়। যদিও টুপির ফ্যাব্রিক নিয়ে তেমন একটা পরীৰা নিরীৰা হয়নি এক যুগ ধরে। 
তবে ডিজাইন ও রঙের ৰেত্রে ভিন্নমাত্রা আনার চেষ্টা করা হয়েছে। ক্যাপের টার্গেট গ্রম্নপ যেহেতু তরম্নণ প্রজন্ম ফলে ডিজাইন ও কালার সিলেকশনে প্রাধান্য পেয়েছে তরুণদের পছন্দ। স্ট্রাইপ ক্যাপের চেয়ে এক রঙা ক্যাপের কদরই এখন পর্যন্ত বেশি। প্লাস্টিকের স্ট্র্যাপের সঙ্গে এখন অবশ্য বাহারি ম্যাটেরিয়াল ব্যবহার করা হচ্ছে। এক্সক্লুসিভ ব্র্যান্ড টুপিগুলো লাইসেন্সড আইটেম হওয়ায় এগুলোর দাম একটু বেশিই। এ ব্র্যান্ড ক্যাপগুলো কেনার সামর্থ্য খুব কম বাঙালীরই আছে। তবে চমকপ্রদ তথ্য হচ্ছে এসব ব্র্যান্ডের ক্যাপ তৈরি হয় খোদ ঢাকাতেই। কিন্তু এদের কোনটাই বাংলাদেশে পাওয়া যায় না। বাইরের দেশগুলোতে স্পোর্টস ক্যাপের চাহিদা বেশি। ক্রিকেট, বেসবল, টেনিস, জগিং এমনকি ফিলিংয়ের জন্য জন্যও আলাদা আলাদা ক্যাপ রয়েছে। আমাদের এখানে ব্যাগি, রাউন্ড, কাউন্টি, নরমাল রেপ্লিকা ক্যাপের কদর বেশি। এগুলোর দাম পড়বে ১০০-১৫০ টাকার মধ্যে। অন্যদিকে গোলটুপি, হ্যাটের দাম ২০০-৩০০ টাকার মধ্যে। একটু স্টাইলিশ ক্যাপ চাইলে বসুন্ধরা সিটির সিঙ্থ লেভেলে ঢুঁ মারতে পারেন। ইয়ংদের জন্য এখানে রয়েছে বাহারি আর জমকালো আয়োজন। মেট্রো শপিং মল ও পস্নাজা এ আরে রয়েছে টুপির এঙ্ক্লুসিভ শপ। সোল ড্যান্স ও দর্জি বাড়িতেও পেয়ে যাবেন মনের মতো ক্যাপ। মোটামুটি কম দামে বাহারি টুপির সন্ধানে যারা আছেন তাদের নিউ মার্কেট, এলিফ্যান্ট রোড, ফার্ম ভিউ মার্কেট, বঙ্গবাজার, স্টেডিয়াম, গাউসিয়া মার্কেট, মৌচাক মার্কেট, গুলিসত্মান হতে পারে নির্ভরযোগ্য স্থান। কার জন্য কেমন টুপি যাদের গায়ের রঙ উজ্জ্বল তারা একটু গাঢ় রঙের টুপি বেছে নিতে পারেন। গায়ের রঙ ডার্ক কমপেস্নঙ্নের হলে লাইট কালারই ভাল। এৰেত্রে এ্যাশ, পেস্ট, স্কাই বস্নু, সাদা প্রভৃতি রঙ বেছে নিতে পারেন।
মুখের গড়ন গোলাকৃতির হলে বাকেট হ্যাট ব্যবহার করম্নন। আর ক্যাপ পরতে চাইলে মাথায় পুরোপুরি ফিট হয় এরকম বড় ধরনের মানানসই সাইজের ক্যাপ পরতে পারেন। ওভাল শেপ ও ছোট আকৃতির মুখম-লে শর্ট ব্রিম, স্পোর্ট লুকের যে কোন ক্যাপ ভাল মানাবে। 


বাড়তি আয় : টুপি তৈরি করে আয়

বাড়তি আয় 
টুপি তৈরি করে আয়

বছরজুড়েই আছে নামাজের টুপির চাহিদা। ঘরে বসেই তৈরি করা যায় টুপি। সেলাই জানা থাকলে যেকোনো নারী বা পুরুষ টুপি তৈরি করে আয় করতে পারেন



বাজারে নানা ধরনের নামাজের টুপি পাওয়া যায়। কোনোটি কাপড় দিয়ে তৈরি, কোনোটি নাইলনের। কোনোটি পাতলা, কোনোটি পুরু। তবে কাপড়ের তৈরি টুপির চাহিদা বেশি। দাম তুলনামূলক কম পড়ে বলেও বিক্রি হয় বেশি। নামাজের টুপি মেলা, হাটবাজার, মসজিদ ও মাজারের সামনে, স্থানীয় দোকানে পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করা যায়। ২০০০-৩০০০ টাকা মূলধন নিয়ে কাপড়ের টুপি তৈরির ব্যবসা শুরু করা সম্ভব।
সেলাই জানতে হবে আগে
টুপি তৈরি করতে চাইলে আগে কাপড় সেলাই জানা থাকা চাই। কাপড় কাটা ও সেলাইয়ের দক্ষতা অর্জনের জন্য প্রশিক্ষণ নিতে হবে। টুপি তৈরির কাজে অভিজ্ঞ কারো সঙ্গে কিছুদিন কাজ করে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ নিতে পারেন। বিসিক, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরসহ অনেক সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সেলাই প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে।
যা যা লাগবে
স্থায়ী উপকরণ হিসেবে লাগবে একটি পায়ে চালিত সেলাই মেশিন। দাম পড়বে পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা। কাঁচি ৯০-১০০, গজ ফিতা ১০-১২, স্কেল ২৫-৩০, ইস্ত্রি কেনা যাবে ৬০০-৭০০ টাকায়। কাঁচামাল হিসেবে লাগবে কাপড় ২ গজ ১২০-১৩০ টাকা, সুতা ২ কাটিম ৮-১০ সুতা, সুঁই ৫টি ৮-১০ টাকা, টেইলার্স চক ১টি ৫-৭ টাকা। সুতা, বোতাম ও বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির দোকানেই পাওয়া যাবে এসব পণ্য।
যেভাবে তৈরি করবেন
প্রথমে একটি নকশি মোটিফ নিয়ে বৃত্তাকার ডিজাইন করে নিতে হবে। এরপর নির্দিষ্ট মাপে কাপড় কাটতে হবে। কাপড়ের চারদিকে মেশিনে সেলাই করে নিতে হবে। টুপির চারদিকের অংশটি সেলাই করে নিতে হবে এবং পরে মাঝের অংশটি জোড়া লাগাতে হবে। টুপি তৈরি যেন নিখুঁত হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। টুপি তৈরির পর ইস্ত্রি করতে হবে।
লাভের হিসাব
আয়ের পরিমাণ নির্ভর করে টুপি তৈরির পরিমাণ ও বিক্রির ওপর। ডিজাইনভেদে প্রতিটি টুপি ২০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। এ থেকে মাসে অনায়াসেই ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব।

Tuesday, April 28, 2015

নামাজের টুপি তৈরি ব্যবসা

নামাজের টুপি তৈরি

নামাজের টুপি তৈরি কনটেন্টটিতে নামাজের টুপি তৈরি ও এর ব্যবসা কীভাবে শুরু করা যায়, ব্যবসা শুরু করার জন্য কোথায় প্রশিক্ষণ নেওয়া যায় , এই ব্যবসা শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ, পরিমাণ, মূল্য ও প্রাপ্তিস্থান এবং সর্বোপুরি এর মাধ্যমে কীভাবে বাড়তি আয় করা সম্ভব, সেই বিষয় সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে।

নামাজের টুপি তৈরি ব্যবসা



নানা রকম ব্যবসার মাধ্যমে মানুষ স্বাবলম্বী হবার চেষ্টা করে। সেলাই জানা থাকলে যে কোন নারী বা পুরুষ নামাজের টুপি তৈরির ব্যবসা করে উপর্জনের ব্যবস্থা করতে পারেন।

বাজার সম্ভাবনা 
মূলধন 
প্রশিক্ষণ 
প্রয়োজনীয় উপকরণ, পরিমাণ, মূল্য ও প্রাপ্তিস্থান 
টুপি তৈরির নিয়ম 
আনুমানিক আয় ও লাভের পরিমাণ 
সচরাচর জিজ্ঞাসা


বাজার সম্ভাবনা 
বাজারে নানান ধরণের নামাজের টুপি পাওয়া যায়। যেমন কোনটি কাপড় দিয়ে তৈরি, কোনটি নাইলনের তৈরি। কোনটি পাতলা, কোনটি পুরু। কাপড়ের তৈরি টুপির দাম তুলনামূলক কম থাকে ফলে বিক্রি বেশি হয়। নামাজের টুপি বিক্রি করে মেলা, হাট-বাজার ও স্থানীয় দোকানে পাইকারি ও খুচরা দামে বিক্রি করা সম্ভব। এছাড়া বিভিন্ন মসজিদ ও মাজারের সামনে নামাজের টুপি বিক্রি করা যেতে পারে।

মূলধন
আনুমানিক ১৮০০-২০০০ টাকা মূলধন নিয়ে কাপড়ের টুপি তৈরির ব্যবসা শুরু করা সম্ভব।  বড় আকারে কাপড়ের টুপি তৈরির ব্যবসা  শুরু করতে চাইলে যদি নিজের কাছে প্রয়োজনীয় পুঁজি না থাকে তাহলে স্থানীয় ঋণদানকারী ব্যাংক, সরকারী বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান (এনজিও) থেকে শর্ত সাপেক্ষে  স্বল্প সুদে ঋণ নেয়া যেতে পারে।

প্রশিক্ষণ
কাপড় সেলাই শুরু করার আগে দক্ষতা অর্জন করা অবশ্যই প্রয়োজন। তাই কাপড় কাটা ও সেলাই এ দক্ষতা অর্জনের জন্য প্রশিক্ষণ নিতে হবে। অভিজ্ঞ কারো সহকারী হিসেবে কিছুদিন কাজ করে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ নেওয়া সম্ভব। এছাড়া বিসিক, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের সেলাই প্রশিক্ষণ শাখায় যোগাযোগ করে প্রশিক্ষণ নেয়া সম্ভব। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থের বিনিময়ে প্রশিক্ষণ নেয়া সম্ভব।

প্রয়োজনীয় উপকরণ, পরিমাণ, মূল্য ও প্রাপ্তিস্থান 
* স্থায়ী উপকরণ  

উপকরণ
পরিমাণ
আনুমানিক মূল্য (টাকা)
প্রাপ্তিস্থান
সেলাই মেশিন (পা চালিত)
১টা
৪৫০০-৪৮০০
সেলাই মেশিন বিক্রয়ের শোরুম
কাঁচি
১টা
৯০-১০০
সুতা বোতামের দোকান
গজ ফিতা
১টা
১০-১২
সুতা বোতামের দোকান
সেপ স্কেল
১টা
২৫-৩০
সুতা বোতামের দোকান
ইস্ত্রি
১টা
৫০০-৫৫০
বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির দোকান
মোট=৫১২৫-৫৪৯২ টাকা 
তথ্যসূত্র : মাঠকর্ম, চাটমোহর, পাবনা, ডিসেম্বর ২০০৯।

* কাঁচামাল 
উপকরণ
পরিমাণ
আনুমানিক মূল্য (টাকা)
প্রাপ্তিস্থান
কাপড়
২ গজ
১২০-১২৫
কাপড়ের দোকান
সুতা
২ কাটিম
৮-১০
সুতা বোতামের দোকান
সুঁই
৫টি
৮-১০
সুতা বোতামের দোকান
টেইলার্স চক
১টি
৫-৭
সুতা বোতামের দোকান
মোট=১৪১-১৫২ টাকা
তথ্যসূত্র : মাঠকর্ম, চাটমোহর, পাবনা, ডিসেম্বর ২০০৯।

টুপি তৈরি নিয়ম 
১ম ধাপ
টুপির নির্দিষ্ট মাপে কাপড় কেটে নিতে হবে।
২য় ধাপ 
কাপড়ের চারদিকে মেশিনে সেলাই করে নিতে হবে। প্রথমে টুপির চারদিকের অংশটি সেলাই করে নিতে হবে এবং পরে মাঝের অংশটি জোড়া লাগিয়ে দিতে হবে।
৩য় ধাপ
টুপিটি তৈরি যেন নিখুঁত হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
৪র্থ ধাপ 
টুপিগুলো তৈরির পর সেগুলো ইস্ত্রী করতে হবে। 

 আনুমানিক আয় ও লাভের পরিমাণ 
* খরচ
স্থায়ী যন্ত্রপাতির অবচয় (ক্ষতি) বাবদ
৭-৮ টাকা
কাঁচামাল বাবদ
১৪১-১৫২ টাকা
                      মোট=১৪৮-১৬০ টাকা 
তথ্যসূত্র : মাঠকর্ম, চাটমোহর, পাবনা, ডিসেম্বর ২০০৯।

* আয় 
মাঠকর্ম, চাটমোহর থেকে জানা যায়,  

১ গজ কাপড় দিয়ে ১২টি টুপি তৈরি সম্ভব
২ গজ কাপড় দিয়ে ২৪টি টুপি তৈরি সম্ভব

১টি টুপি বিক্রি হয়
১০-১২ টাকা
২৪ টি টুপি বিক্রি হয়
২৪০-২৮৮ টাকা
তথ্যসূত্র : মাঠকর্ম, চাটমোহর, পাবনা, ডিসেম্বর ২০০৯।

* লাভ  
২৪টি টুপিতে আয় হয়
২৪০-২৮৮ টাকা
২৪টি টুপিতে খরচ হয়
১৪৮-১৬০ টাকা
                      লাভ=৯২-১২৮ টাকা 
অর্থাৎ ৯২-১২৮ টাকা লাভ করা সম্ভব। তবে সময় ও স্থানভেদে এর কম বা বেশি লাভ হতে পারে। 
তথ্যসূত্র : মাঠকর্ম, চাটমোহর, পাবনা, ডিসেম্বর ২০০৯।

আমাদের দেশে সারা বছরই নামাজের টুপির চাহিদা থাকে। অল্প পুঁজি নিয়ে যে কেউ ঘরে বসেই টুপি তৈরির ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

সচরাচর জিজ্ঞাসা 

প্রশ্ন ১ : কাপড়ের টুপি তৈরির ব্যবসা শুরু করতে কি পরিমাণ মূলধন লাগে ?
উত্তর : আনুমানিক ৫৫০০-৬০০০ টাকা মূলধন নিয়ে কাপড়ের টুপি তৈরির ব্যবসা শুরু করা সম্ভব।

প্রশ্ন ২ : টুপি তৈরি শেখার জন্য কোন প্রশিক্ষণের প্রয়োজন আছে কি ?
উত্তর : টুপি তৈরি শেখার জন্য সেলাইয়ের প্রশিক্ষণের প্রয়োজন আছে। এক্ষেত্রে সরাসরি প্রশিক্ষণ নেয়া যেতে পারে বা অভিজ্ঞ কারো কাছ থেকে ধারণা নেয়া যেতে পারে।

প্রশ্ন ৩ : টুপি তৈরির পর কিভাবে বাজারজাতকরণ করা যায় ?
উত্তর : টুপি তৈরি করে বাজারে খুচরা বা পাইকারি দরে বিক্রি করা যেতে পারে।



কৃতজ্ঞতা স্বীকার

পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলার মফিজ করিমের নিকট থেকে ২০০৯ সালের নভেম্বর মাসে কাপড়ের টুপি তৈরির ব্যবসা সম্পর্কে সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে।

Source: http://www.infokosh.gov.bd/



Related All Links:


নামাজের টুপি তৈরি ব্যবসা



কাপড়ের টুপি তৈরী: প্রস্তুতপ্রণালী, বাজারজাতকরণ, প্রশিক্ষন প্রদানকারী সংস্থা ও কেস স্টাডি